تو کجا من کجا، تو کجا من کجا | তুমি কোথায়! আমি কোথায়! | কবিতা | অনুবাদ | উর্দু গজল - বাংলা অনুবাদ লিরিক্স |

 تو کجا من کجا، تو کجا من کجا

উল্লেখিত উর্দু কবিতাটির বাংলা অনুবাদ ও ব্যাখ্যাসহ নিচে দেওয়া হলো:

تو امیرِ حرم، میں فقیرِ عجم

تیرے گن اور یہ لب، میں طلب ہی طلب

تو عطا ہی عطا، میں خطا ہی خطا

تو کجا من کجا، تو کجا من کجا

তুমি হারামের (কাবার) ইমাম, আমি অনারব (অযথার্থ) ফকির।

তোমার গুণগান উপযুক্ত এই ঠোঁট নয়, আমি শুধু চাইতেই জানি।

তুমি কেবল দান করো, আমি কেবল ভুলেই ভুল।  

তুমি কোথায়! আমি কোথায়! তুমি কোথায়! আমি কোথায়!

সারমর্ম:

এই পঙক্তিগুলোতে কবি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর মর্যাদা ও নিজের তুচ্ছতা প্রকাশ করেছেন। নবীজি মহান, দানশীল, গুণে পরিপূর্ণ, আর কবি নিজেকে গুনহগার, অক্ষম, কেবল প্রার্থনাকারী হিসেবে তুলে ধরেছেন। এই ভাষায় রয়েছে বিনয়, ভক্তি ও প্রেমের গভীরতম প্রকাশ।

تو ہے احرامِ انوار باندھے ہوئے

میں درودوں کی دستار باندھے ہوئے

کعبۂ عشق تو، میں ترے چار سو

تو اثر میں دعا، تو کجا من کجا

তুমি নূরের (আলোর) ইহরাম পরিধানকারী,

(অর্থাৎ তুমি আলোকময় পবিত্রতার প্রতীক।)

আমি দরূদের পাগড়ি মাথায় বেঁধেছি,

(অর্থাৎ আমি দরূদ ও সালামকে নিজের সম্মান হিসেবে গ্রহণ করেছি।)

তুমি ভালোবাসার কাবা, আর আমি তোমার চারপাশে ঘুরছি, 

(তুমি ভালোবাসার কেন্দ্র, আর আমি তোমার প্রেমে চক্কর কাটছি।)

তুমি প্রার্থনার ফল, আমি শুধু দোয়ার শব্দমাত্র, তুমি কোথায়! আমি কোথায়!

সারমর্ম:

এই পঙক্তিগুলোর মাধ্যমে কবি নবীজি ﷺ এর প্রতি গভীর ভক্তি প্রকাশ করছেন। নবীজি আলোর মতো পবিত্র, ভালোবাসার কেন্দ্রস্থল, আর কবি নিজেকে একজন দরূদ পাঠকারী প্রেমিক, নিম্নমানের মানুষ হিসেবে দেখছেন। তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন— নবীজি যে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী, সেখানে পৌঁছানো তার মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব।

میرا ہر سانس تو خوں نچوڑے مرا 

تیری رحمت مگر دل نہ توڑے مرا

کاسۂ ذات ہوں، تیری خیرات ہوں

تو سخی میں گدا، تو کجا من کجا

আমার প্রতিটি নিঃশ্বাস যেন রক্ত শুষে নেয়,  

(অর্থাৎ আমি চরম কষ্টে আছি, জীবন যেন যন্ত্রণায় পূর্ণ।)

তবুও তোমার রহমত আমার হৃদয় ভাঙে না, 

(অর্থাৎ নবীজির দয়া ও ভালবাসা এত গভীর যে তা সান্ত্বনা দেয়।)

আমি আমার অস্তিত্বের ভিক্ষার পাত্র, আর তুমিই তার দান,

(অর্থাৎ আমার সত্ত্বা এক ভিক্ষুকের মতো, যা তোমার দানের উপর নির্ভরশীল।)

তুমি দানশীল, আমি ভিক্ষুক — তুমি কোথায়! আমি কোথায়!

সারমর্ম:

এই অংশে কবি তার দুঃখ-কষ্টের চিত্র তুলে ধরছেন, এবং সেই দুঃখেও নবীজি ﷺ এর দয়ার আশ্রয়ে প্রশান্তি খুঁজে পাচ্ছেন। কবি নিজের অস্তিত্বকেই নবীজির দানের উপর নির্ভরশীল মনে করছেন। এখানে গভীর বিনয়, ভালোবাসা ও নবীপ্রেমের প্রকাশ ঘটেছে।

تو حقیقت ہے میں صرف احساس ہوں

تو سمندر، میں بھٹکی ہوئی پیاس ہوں

میرا گھر خاک پر اور تری رہگزر

سدرۃ المنتہیٰ، تو کجا من کجا

তুমি বাস্তবতা, আমি শুধু অনুভব।

তুমি মহাসমুদ্র, আমি পথহারা এক পিপাসা।

আমার ঘর ধূলিতে (নিম্নস্তরে), আর তোমার চলার পথ

সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত — তুমি কোথায়! আমি কোথায়!

সারমর্ম: 

এই অংশে কবি মহানবী ﷺ-এর উচ্চ মর্যাদা ও নিজের নিম্নতা তুলে ধরেছেন। তিনি বোঝাতে চাচ্ছেন, নবীজি ﷺ হলেন আল্লাহর কাছে উত্তম ও বাস্তবতাসম্পন্ন, আর কবি নিজেকে শুধু এক তুচ্ছ অনুভূতি হিসেবে দেখছেন। নবীজি মহাসমুদ্রের মতো, আর কবি পথহারা তৃষ্ণার্ত — যিনি পথ পাচ্ছেন না। নবীর অবস্থান আকাশের সিদরাতুল মুনতাহায়, আর কবি রয়েছে নিচু ধূলির মধ্যে। এই তুলনার মাধ্যমে নবীজির উচ্চতা ও নিজের বিনয় প্রকাশ করা হয়েছে।

ڈگمگاٰؤں جو حالات کے سامنے

آئے تیرا تصور مجھے تھامنے 

میری خوش قسمتی، میں ترا اُمتی

تو جزا میں رضا، تو کجا من کجا

যখন পরিস্থিতির সামনে আমি টলমল করি,

তোমার ভাবমূর্তি তখন এসে আমাকে শক্তি দেয়।

এটাই আমার সৌভাগ্য — আমি তোমার উম্মত।

তুমি পুরস্কারেও সন্তুষ্টি দান করো — তুমি কোথায়, আর আমি কোথায়!

সারাংশ:

কবি বলছেন, দুঃখ-কষ্ট ও কঠিন সময়েও যখন তিনি ভেঙে পড়েন, তখন নবীজির ﷺ স্মরণই তাকে ধৈর্য ও সাহস দেয়। তাঁর সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য হলো— তিনি রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর উম্মত। আর নবীজি ﷺ শুধু পুরস্কার দেন না, তাঁর সন্তুষ্টি নিজেই এক মহান দয়া। কবি নিজের তুচ্ছতা ও রাসূলের উচ্চ মর্যাদা তুলে ধরছেন — "তুমি কোথায়! আমি কোথায়!"

دوریاں سامنے سے جو ہٹنے لگیں

جالیوں سے نگاہیں لپٹنے لگیں 

آنسوؤں کی زباں ہو میری ترجماں

دل سے نکلے صدا، تو کجا من کجا

দূরত্বগুলো সামনে থেকে সরে যেতে লাগল,

রওজা মুবারকের জালির সঙ্গে চোখ জড়িয়ে পড়ল,

আমার কথা যেন অনুবাদ করে চোখের অশ্রু,

হৃদয় থেকে যেন ধ্বনি উঠে আসে— তুমি কোথায়! আর আমি কোথায়!

ব্যাখ্যা:

কবি বলছেন, যখন মনের দূরত্ব কেটে যেতে শুরু করে, তখন চোখ রওজা মোবারকের জালিতে আটকে যায় ভালোবাসায়। মুখে যতই ভাষা না থাকুক, চোখের অশ্রু যেন তার মনের কথা বলে দেয়। আর তখন হৃদয় থেকে একমাত্র অনুভব ভেসে আসে— নবীজির মহান মর্যাদার সামনে নিজের ক্ষুদ্রতা: তুমি কোথায়, আর আমি কোথায়!

এটি এক গভীর ভক্তিপূর্ণ অবস্থার প্রকাশ, যেখানে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বিনয় মিলেমিশে গেছে।


পরবর্তী পোস্ট পূর্ববর্তী পোস্ট
কোন মন্তব্য নেই
মতামত লিখুন
comment url